বর্তমান যুগে কম্পিউটারের জন্য প্রচুর ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার রয়েছে। তাই আপনি
যদি আপনার কাজের জন্য পারফেক্ট ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার খুঁজতে যান, তাহলে এতসব
সফটওয়্যার মাঝে আপনারা হারিয়ে যেতে পারেন। তাই আজকের এই আর্টিকেলে প্রফেশনাল
সফটওয়্যার এর মাধ্যমে ভিডিও এডিটিং করতে পারবেন।
ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার আপনি ফ্রি ডাউনলোড করতে পারবেন। আপনি কি আপনার ভিডিওগুলো
এডিটিং করার জন্য প্রফেশনাল একটি এডিটিং সফটওয়্যার খুজছেন। তাহলে আপনি একদম সঠিক
জায়গায় এসেছেন। আজ আপনাদের সাথে আলোচনা করব প্রফেশনাল দশটি ভিডিও এডিটিং
সফটওয়্যার সম্পর্কে।
ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার বলতে আমাদের চোখের সামনে যেটি ভেসে ওঠে তা হচ্ছে Adobe
Premiere Pro। বিশ্বের সকল বড় বড় এডিটররা এই সফটওয়্যারটি ব্যবহার করেন।Adobe
Premiere Pro CC একটি অন্যতম ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার। বর্তমান বিশ্বে এটি
একটি জনপ্রিয় ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার। এই সফটওয়্যারটি অডিও এবং ভিডিও
ফিল্টার এর বিস্তর ভান্ডার। আপনারা উন্নত মানের ভিডিও এডিটিং করতে পারবেন এই
সফটওয়্যার এর মাধ্যমে।
আপনি যেনে অবাক হবেন যে, প্রথম আলো এবং বিবিসি এর মত নিউজ চ্যানেল গুলো
তাদের কাজের জন্যAdobe Premiere Pro ব্যবহার করে থাকেন। তাহলে আপনারা ভাবতেই
পারছেন না, এটা কত জনপ্রিয় মানের একটি সফটওয়্যার।
ভিডিও ট্রানজিশন, অডিও ইফেক্ট, ভিডিও ইফেক্ট, ক্লিপ স্পিড এরকম
আরো অনেক ফিচার Adobe Premiere Pro তে আছে।
সাধারণত বলা যায় প্রফেশনাল ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার এর যে ধরনের টুলস থাকা দরকার
তার সবগুলোই এর মধ্যে রয়েছে। যেহেতু এডবের সফটওয়্যার গুলো ফ্রি নয়, তাই এ
সফটওয়্যারটি ব্যবহার করতে চাইলে আপনাকে প্রতি মাসে ২০.৯৯ ডলার পেমেন্ট করতে হবে।
তবে আপনি ইচ্ছা করলে সাতদিনের ফ্রি টাইম ভার্সনটি ব্যবহার করতে পারেন।
এডোবি আরেকটি অন্যতম প্রফেশনাল ভিডিও এডিটর হলো Adobe Premiere Elements এডোবি
সাধারণত নতুনদেরকে প্রকাশ করে তৈরি করেছে। সফটওয়্যারটির স্পিল
ইউজার ইন্টারফেস ও স্মুথ পারফর্মেন্স অবশ্যই আপনাকে অনেক অনেক মুগ্ধ করবে।
এই সফটওয়্যারটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যে কোন মানুষ খুব সহজে ভিডিও তৈরি
করতে পারবে কোনরকম টেকনিক্যাল জ্ঞানের সাহায্য ছাড়াই।
এটি এমন একটি সফটওয়্যার যা আনলিমিটেড ভিডিও এবং অডিও ট্র্যাক হ্যান্ডেল করতে
সম্ভব। এই সফটওয়্যারটি অনেক চমৎকার যাতে রয়েছে ফিচার যেগুলো আপনাকে প্রফেশনাল
ভিডিও তৈরিতে অনেক সাহায্য করবে। এই সফটওয়্যার টিতে কুইক মুভিস,
অটোমেটিক ভিডিও এবং সাইট শো ক্রিয়েশন এরকম অনেক ফিচার রয়েছে
Vegas Pro
Vegas Pro সফটওয়্যার খুবই শক্তিশালী একটি ভিডিও এডিটর। এটি দিয়ে
প্রফেশনাল মানের অনেক সুন্দর ভিডিও এডিটিং করা সম্ভব। অনেক প্রফেশনাল
ইউটিউবার আছেন যারা অনেক সুন্দর সুন্দর ভিডিও এডিটিং করার জন্যVegas Pro
সফটওয়্যারটি ব্যবহার করে থাকেন
এতে ভিডিও ট্রেবলাইজার, মোশন ট্রাকি্ ৩৬০ ডিগ্রী ভিডিও এডিটিং অডিও
এবং ভিডিও সহ অসংখ্য টিচার রয়েছে। তাছাড়া এই সফটওয়্যারটিতে ভিজুয়াল
ইফেক্ট তৈরির ফিচার আছে যা আপনার আলাদা সফটওয়্যার ব্যবহারের প্রয়োজন হবে
না।
Vegas Pro সফটওয়্যারটির কাস্টমারজেবল ইউজার ইন্টারফেস থাকায় আপনি খুব সহজেই
নিজের মত করে কাস্টমাইজ করতে পারবেন। এই সফটওয়্যারটিতে প্রফেশনাল মানে
ইডিটিং এর জন্য প্রায় সকল ফিচার ত্যাগ করা হয়েছে। আপনি মাসির ২০.৯৯ ডলার খরচের
বিনিময়ে ইচ্ছামতো এই সফটওয়্যারটি ব্যবহার করতে পারবেন।
PowerDirector সফটওয়্যারটি সাইবার লিংক তৈরির জন্য আমাদের লিস্টে দ্বিতীয়
স্থানে রয়েছে। এটি খুব শক্তিশালী একটি ভিডিও ও অডিও এডিটিং
সফটওয়্যার। সফটওয়্যারটির স্পিল ইউজার ইন্টারফেস থাকায় আপনি অনেক
নতুন নতুন এবং প্রফেশনাল মানের ভিডিও খুব সহজেই তৈরি করতে পারবেন।
CyberLink PowerDirector এমন একটা সফটওয়্যার এতে কালার
এডজাস্টমেন্ট, কাস্টমারজেবল ডিজাইন টুলস মাল্টি কেন এডিটিং, অডিও এবং ভিডিও
প্রি কাট সহ অনেক ফিচার রয়েছে। যা আপনার কাছ থেকে অনেক সহজ করে
দিবে এডোবির মত এই সফটওয়্যারটিও পেইড। তাই আপনি ভিডিওটি ব্যবহার করতে চান তাহলে
আপনাকে ৭৮.৯৯ ডলার দিয়ে এই সফটওয়্যারটি কিনতে হবে।
Final Cut Pro
Final Cut Pro এই সফটওয়্যারটি খুবই শক্তিশালী একটি ভিডিও এডিটর। মাইক্রোমিডিয়ার
তৈরি এই সফটওয়্যারটি বর্তমান সময়ে অ্যাপেল ইনকর্পোরেটরের অধীনস্থ হয়ে আছে।
প্রফেশনাল মনির এডিটিং এর জন্যFinal Cut Pro এই সফটওয়্যারটিতে প্রায় সব ফিচার
প্যাক করা হয়েছে। তাছাড়াও এই সফটওয়্যারটিতে বেশ কিছু প্রি বিল্ট ফিচারআছে।
এই সফটওয়্যারটিতে মাল্টি-ক্যাম এডিটিং মোশন ট্র্যাকিং ৩৬০ ডিগ্রী এইচডিআরসহ আরো
অনেক অনেক টিচার রয়েছে। বর্তমান সময়ে এটি শুধু ইন্তেল প্রসেসের ভিত্তি
কম্পিউটারের ব্যবহার হয়ে থাকে। আপনি যদি একজন ম্যাক ইউজার হন তাহলে এই পেইড
সফটওয়্যার টি আপনার জন্য লাভজনক হতে পারে। আপনি যদি এককালীন এই সফটওয়্যারটি
কিনতে চান তাহলে ২৯৯.৯৯ ডলার প্রেমেন্ট করতে হবে।
Corel VideoStudiou Ultimate
আমাদের লিস্টে আরেকটি প্রফেশনাল এবং জনপ্রিয় শক্তিশালী ভিডিও এডিটর হল Corel
VideoStudiou
এই সফটওয়্যারটি অনেকটা এড বি প্রিমিয়ার ইলিমেন্ট এর মত নতুনদের ওপর আকর্ষণ করে
তৈরি করা হয়েছে। সফটওয়্যারটির অনেক সহজ ইউজার ইন্টারফেস ঢাকার কারণে এটি
ব্যবহার করাও খুব সহজ। মাল্টি-ক্যাম ্প এডিটিং, ফোরকে ভিডিও অডিও সাপোর্ট
৩৬০ ডিগ্রিভিয়ার ভিডিও সাপোর্টের পাশাপাশি এই সফটওয়্যারটিতে নিজস্ব মিউজিক এবং
অনেক পরিমাণ ইফেক্ট রয়েছে।
Corel VideoStudiou সফটওয়্যারটির সাহায্যে আপনি খুব সহজেই এফেক্ট রিচ
ভিডিও তৈরি করতে পারবেন। তাছাড়া এই সফটওয়্যারটি অতি দ্রুত ভিডিও রেকর্ড করতেও
সক্ষম হন। তাই আপনি যদি এই সফটওয়্যারটি ব্যবহার করতে চান তাহলে আপনাকে ৮৮.৯৯
ডলার দিয়ে এটি কিনতে হবে।
Camtasia Studio
Camtasia Studio এই সফটওয়্যারটি ব্যবহার করুন আপনি খুব সহজেই টিউটোরিয়াল টাইপের
ভিডিও বানাতে পারবেন। এটি অত্যন্ত প্রফেশনাল একটি ভিডিও এডিটর। Camtasia Studio
এই সফটওয়্যারটির ক্যামটাশিয়া রেকর্ডার ও ক্যাম্পাসিয়া ভিডিও এডিটর
নামের দুইটি অংশ আছে। রেকডার দিয়ে ভিডিও ক্যাপচার করার পর এই এডিটর অংশে
ভিডিও গুলো সম্পাদন করা হয়ে থাকে।
এই সফটওয়্যারটি টিউটোরিয়াল ভিডিও তৈরি করতে প্রধান সম্পাদক হিসেবে কাজ করে। এই
সফটওয়্যারটির ইউজার ইন্টারফেস অনেক সহজ হওয়ায় যে কেউ অনায়াসে এটি ব্যবহার
করতে পারবে। এই সফটওয়্যারটিতে প্রয়োজনীয় সকল ফিচার ত্যাগ
করা আছে। এই পেইড সফটওয়্যারটি বিশ্বব্যাপী প্রায় ২৫ মিলিয়নের বেশি
মানুষ ব্যবহার করেন।
Filmora এই সফটওয়্যারটি বর্তমান সময়ে প্রফেশনাল এবং খুবই জনপ্রিয় ভিডিও
এডিটর। এই সফটওয়্যার টি পার্সোনাল কম্পিউটার ব্যবহারের জন্য খুব উপযোগী ভিডিও
এডিটর হিসেবে পরিচিত। ভিডিও এডিটিং এর জন্য যাবতীয় বিচার এই সফটওয়্যারে প্যাক
করা রয়েছে। মাল্টি-ক্যাম ্প এডিটিং ৪কে ভিডিও সাপোর্ট অডিও এবং ভিডিও
রেকর্ডার ইত্যাদি সকল পিকচার গুলো এই সফটওয়্যার এর মধ্যে রয়েছে।
Filmora এই সফটওয়্যারটি ব্যবহারের জন্য আপনাকে কোনরকম প্রফেশনাল ভিডিও
এডিটিং কোর্স করতে হবে না এবং আপনাকে প্রফেশনাল এডিটরও হতে হবে না। কারণ এটি
ব্যবহার করা খুব সহজ। যেহেতু এটি প্রেইড সফটওয়্যার তাই আপনাকে সেটি ব্যবহার করতে
চান তাহলে আপনাকে ৬০.৯৯ ডলার দিয়ে এই সফটওয়্যারটি ক্রয় করতে হবে। যা এর
কাজের তুলনায় কিছুই না।
Pinnacle Studio
Pinnacle Studio হলো প্রো লেভেলের কাছাকাছি অন্যতম একটি ভিডিও
এডিটর সফটওয়্যার। এটি নতুনদের জন্য একটি সুবিধা জনক সফটওয়্যার।Filmora এর মত এটিও নতুনদের জন্য ব্যবহার করা অনেক সহজ। এই সফটওয়্যারটিতে
সহজ উপায়ে ব্যবহারযোগ্য ইউজার ইন্টারসিটির পাশাপাশি সকল রকমের প্রয়োজনীয় ফিচার
রয়েছে।
এই সফটওয়্যারটিতে দুই হাজারেরও বেশি ইফেক্ট আছে যা অন্যান্য ভিডিও এডিটরের
তুলনায় অনেক গুণ বেশি। তাছাড়া এটি অতি দ্রুত অডিও এবং ভিডিও রেকর্ডিং করতে
সক্ষম। এটি একটি পেইড সফটওয়্যার আপনি যদি একটি ব্যবহার করতে চান তাহলে আপনাকে
৭৯.৫ ডলার দিয়ে এটি ক্রয় করতে হবে।
Magix Movie Edit Pro
Magix এর তৈরি এই ভিডিও এডিটর সফটওয়্যারটি দুই দশক ধরে ইউরোপের বাজারে সবার
শীর্ষে রয়েছে। এটি সর্বপ্রথম ২০০১ থেকে ২ সালের মধ্যে বাজারে রিলিজ
করা হয়। সুন্দর ইউজার ইন্টার ফেসের পাশাপাশি এই সফটওয়্যারটি ব্যবহার করা
অনেক সহজ ও সাবলীল। যারা প্রফেশনাল এডিটিং করতে চাই তাদের জন্য এই
ফিচার ইমেজটি অনেক সহজ।
আবার অতি তাড়াতাড়ি রেকর্ডিং এর পাশাপাশি এটি ভিডিও ট্রাভেলাইজ করতেও সক্ষম
হয়। যার ফলে এই সফটওয়্যার এর মাধ্যমে একসাথে ৫০০ প্লাস ভিডিও ক্লিপ অ্যাড
করার পরেও এটি আন্সটেবল হয় না। তাছাড়াও এই সফটওয়্যারটি অনেক উন্নত এই
সফটওয়্যারটিতে পনেরশো প্লাস বা তারও বেশি ইফেক্ট রয়েছে। আকর্ষণীয় এই
পেইড সফটওয়্যারটি ৭৯.৯৯ ডলার দিয়ে ক্রয় করতে পারবেন।
লেখক এর শেষ মন্তব্য
এই পেইড সফটওয়্যার গুলো আপনি ক্র্যাক, কিজেন। এবং সিরিয়াল ইত্যাদির
মাধ্যমে ব্যবহার করতে পারেন। আপনি যদি এইভাবে ব্যবহার করেন তাহলে আপনাকে এক
টাকাও দিতে হবে না। কিন্তু এটা সত্যিকার অর্থে বৈধ নয়।
আমি আপনাকে কখনোই ক্র্যাক সফটওয়্যার টি ইউজ করতে বলবো না। আর আপনি যদি এভাবে
ব্যবহার করতে চান তাহলে সেটা আপনার নিজ দায়িত্বে ব্যবহার করতে পারেন। কারণ এই
সফটওয়্যার গুলো অবৈধভাবে ব্যবহার করা মোটেও ঠিক নয়। আপনার যদি এই
আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে
ভুলবেন না এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url