ওজন কমানোর সহজ ১০ টি উপায়

অতিরিক্ত ওজন কারো জীবনেই কাম্য নয়।আপনি কি অতিরিক্ত ওজন নিয়ে ভুগছেন,তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে কিভাবে সহজ উপায়ে ওজন কমানো যায় চলুন তা জেনে নেওয়া যাক।



নিজেকে পুরোপুরি সুস্থ রেখে মাসে তিন থেকে চার কেজি ওজন কমানো যায়। তবে কারো যদি জরুরি কারণে মাসে চার থেকে পাঁচ কেজি বা তার বেশি ওজন কমানোর প্রয়োজন পড়ে তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

সূচিপত্রঃ ওজন কমানোর সহজ ১০ টি উপায়

  • খাদ্যভাসের পরিবর্তন
  • সুষম খাবার গ্রহণ করতে হবে
  • অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা পরিহার করবেন
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম
  • নিয়মিত ব্যায়াম করা 
  • রাতে তাড়াতাড়ি খাওয়ার চেষ্টা করবেন
  • অতিরিক্ত খাবার পরিহার
  • পর্যাপ্ত পানি পান করুন
  • সবসময় চিনি পরিহার করবেন
  • গ্রিন টি পান করবেন
  • নিয়মিত রঙিন সালাত খাওয়া
  • লেখকের শেষ মন্তব্য

খাদ্যভাসের পরিবর্তন

মাসে ৫ থেকে ৬ কেজি ওজন কমাতে হলে প্রথমে আপনাকে খাদ্য ঘাসের পরিবর্তন করতে হবে। আপনার খাদ যেন প্রতিদিন একই সময় হয় সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। আপনার খাবার হবে সকালবেলা ভারী নাস্তা, দুপুরে ভাত এবং রাতে রুটি। আবার মাঝখানের সময়ে ফলমূল ও খেতে পারেন।
এই খাদ্যাভাস ওজন কমাতে আপনাকে অনেক সাহায্য করবে।


অতিরিক্ত ওজন কারো জন্যই ভালো কিছু বয়ে আনতে পারেনা। তাই আপনি নিয়ম মেনে প্রতিদিন খাবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন। তাহলে আপনার স্বাস্থ্য এবং ওজন দুটোই ভালো থাকবে। এবং আপনি স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারবেন।

সুষম খাবার গ্রহণ করতে হবে

ওজন কমানোর অন্যতম উপায় হচ্ছে সুষম খাবার খাওয়া। আপনি যদি ওজন কমাতে চান তাহলে বেশি পরিমাণে ফলমূল এবং শাকসবজি খেতে হবে। চর্বি এবং চর্বি জাতীয় খাবার খাওয়া যাবে না। বাইরের তেলে ভাজা খাবার খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। পাসপোর্ট সবসময় কম খাওয়ার চেষ্টা করবেন। দুবেলার মধ্যবর্তী সময়ে আপনার যদি খিদে পায় তাহলে ফল বা ফলের জুস খেতে পারেন।


প্রোটিন ওজন কমানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং দীর্ঘ সময় পেটকে ভরা রাখে। প্রোটিনের ভালো উৎস হতে পারে ডিম, মাছ, ডাল ছোলা ইত্যাদি। তাই আপনারা ওজন কমানোর জন্য খাদ্য তালিকায় সবসময় সুষম খাবার রাখবেন।

অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা পরিহার করবেন

আপনারা হয়তো যেন অবাক হতে পারেন, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করলে মানুষ বেশি খায়। ফলে তারা অধিক পরিমাণ মোটা হয়ে যায়। তাই নিজেকে সম্পূর্ণরূপে ফিট রাখতে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা পরিহার করতে হবে। শুধু ওজন কমাতে নয় মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকতেও অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা উচিত নয়।

পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম

একটু সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের দিনে কমপক্ষে ৬ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানোর প্রয়োজন। তবে আপনি যদি এর বেশি ঘুমান তাহলে আপনার ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দিনের বেলায় ঘুমানোর অভ্যাস সব সময় পরিহার করতে হবে।

মনে রাখবেন, অতিরিক্ত ঘুম আপনার শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই নিয়ম মেনে রাতে ঘুমাবেন এবং ভোরে ঘুম থেকে উঠবেন। তাহলে দেখবেন আপনার ওজন কমে যাবে এবং আপনি সুস্থ থাকবেন। এ কথাও মনে রাখতে হবে ঘুমের অভাব মেটাবলিজম কমিয়ে দেয় এবং ক্ষুধার বৃদ্ধির অহরমন বাড়িয়ে দেয়। যা বেশি খাওয়ার প্রবণতা তৈরি করে দেয়।


নিয়মিত ব্যায়াম করা 

দ্রুত ওজন কমানোর অন্যতম একটি মাধ্যম হচ্ছে ব্যায়াম। ব্যায়াম আমাদের শরীরকে যেমন পিঠ রাখে ঠিক তেমনি আমাদের ওজনে কমাতে অনেক সাহায্য করে। তাই এক মাসে পাঁচ থেকে ছয় কেজি বা তার বেশি ওজন কমাতে চাইলে আপনাকে প্রতিদিন কম করে হলেও এক থেকে দুই ঘন্টা ব্যায়াম করতে হবে।

এ সময় টুকুর মধ্যে আপনি হেঁটে আবার দৌড়েও ব্যায়াম করতে পারেন। ওজন কমানোর জন্য সাঁতার কাটা সাইকেল চালানো একটি আদর্শ ব্যায়াম হতে পারে আপনার জন্য। ব্যায়াম করার জন্য আপনাকে ঘরের বাইরে যেতে হবে এমন কোন কথা নেই। আপনি ঘরের দৈনন্দিন কাজের মধ্যে নিজের ব্যায়াম করতে পারবেন।

রাতে তাড়াতাড়ি খাওয়ার চেষ্টা করবেন

ঘুমাতে যাওয়ার কমপক্ষে ১ থেকে ২ ঘন্টা আগে রাতের খাবার খাবেন। চেষ্টা করবেন আটটা থেকে নয়টার মধ্যে রাতের খাবার খেয়ে শেষ করতে। কারণ রাতে খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুয়ে পড়েন তাহলে আপনার ওজন অতি তাড়াতাড়ি বেড়ে যাবে।

রাতে ঘুমানোর আগে যদি আপনার খিদে পায় তাহলে ফলের জুস অথবা দুধ খেতে পারেন। রাতে যদি আপনারা ভারী খাবার খান এবং খাওয়ার পর পরই ঘুমিয়ে জান। তাহলে আপনার ওজন অতি দ্রুত বেড়ে যাবে। তাই রাতে সব সময় হালকা খাবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন।

অতিরিক্ত খাবার পরিহার

আপনার যেটুকু খাবার প্রয়োজন ঠিক ওই পরিমাণে খাবার খাবেন। নিজের শরীরের চাহিদা তুলনায় বেশি খাবার খেলে আপনার ওজন বেড়ে যাবে। তাই এক মাসে পাঁচ থেকে ছয় কেজি বা তার বেশি ওজন কমাতে চাইলে অতিরিক্ত খাবার পরিহার করতে হবে

কারণ খাবারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা ওজন কমানোর একটি অন্যতম মাধ্যম। সবার সময় ছোট ছোট প্লেট ব্যবহার করবেন যা খাবারের পরিমাণ কম রাখতে আপনাকে সাহায্য করবে। এছাড়াও খাবার খাওয়ার সময় মনোযোগ দিবেন যত আপনি খাবারের স্বাদ পুরোপুরি উপলব্ধি করতে পারেন এবং অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে আসে।

পর্যাপ্ত পানি পান করুন

খাবার খাওয়া কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ মিনিট আগে পানি পান করুন। যা আপনার হজমে সাহায্য করবে। যথাসম্ভব চেষ্টা করবেন বাড়ি তৈরি খাবার খেতে। ফাস্টফুড জাঙ্ক ফুড পুরোপুরি পরিহার করার চেষ্টা করবেন

আপনি কি স্বাস্থ্য কমাতে চান তাহলে পরিমাণ মতো এক ঘন্টা পর পর পানি পান করুন। পানি আপনার শরীর থেকে ক্ষতিকারক টক্সিন করে আপনার ওজন কমাতে অনেক সাহায্য করে। এছাড়াও পানি আমাদের ত্বক ও আশ্চর্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণ  পানি রাখবেন এবং নিয়মিত পানি পান করবেন।

সবসময় চিনি পরিহার করবেন

চিনি যুক্ত খাবার ও পানীয় ওজন বাড়ানোর কারণগুলোর মধ্যে একটি। কোমল পানীয়, মিষ্টি ইত্যাদি যতটা সম্ভব পরিহার করবেন। এগুলোর উচ্চ ক্যালরিযুক্ত এবং শরীরের চর্বি বাড়াতে সাহায্য করে।

কাঙ্খিত ওজন কমানোর জন্য খাদ্য তালিকা থেকে চিনি পুরোপুরি পরিহার করুন। কারণ মাত্র একটা চামচ চিনতে 16% ক্যালোরি থাকে যা আপনার ওজনকে অতি দ্রুত বাড়িয়ে দেয়। তাই তা ও দুধে সবসময় তিনি পরিহার করে করুন।

গ্রিন টি পান করবেন

গ্রিন টি তে রয়েছে এমন সব প্রাকৃতিক উপাদান, যা আপনাদের ওজন কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন চার কাপ করে গ্রিন টি এক সপ্তাহ ধরে খেলে শরীর থেকে ৪০০ গ্রাম ক্যালরি ক্ষয় করা সম্ভব হয়। এটা আমাদের দেহের ওজন ঠিক রাখতে অনেক সাহায্য করে। ফলে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় আপনারা অবশ্যই রাখবেন।

গ্রিন টি বা সবুজ চায়ে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা মেটাবলিজম বাড়ায় এবং ফ্যাট ব্রাঞ্চ কমাতে অনেক সাহায্য করে। প্রতিদিন দুই থেকে তিন কাপ সবুজ চা বা গ্রিন টি পান করার চেষ্টা করবেন তাহলে আপনার ওজন দ্রুত কমানো সম্ভব।



নিয়মিত রঙিন সালাত খাওয়া

আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখুন বিভিন্ন রং সবজি বা ফল দিয়ে তৈরি সালাত। এ সালাতের সঙ্গে টক দই ও মেশাতে পারবেন। এতে আরও বেশি উপকৃত হবেন। আপনি সালাত খাওয়ার পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণ শাকসবজি খাবেন।

শাকসবজি ও ফলমন ওজন কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এগুলোতে ফাইবার এবং ভিটামিন এ ভিটামিন ডি ও ভিটামিন সি থাকে ৪ শরীরের প্রয়োজনীয় ওজন কমাতে সাহায্য করে। শাকসবজি ও ফলমূল খেলে পেট ভরা থাকে এবং অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণের প্রবণতা কমে আসবে।                            

লেখকের শেষ মন্তব্য

অতিরিক্ত ওজন কারো পছন্দ নয়। সবার চাই সুস্থ জীবন এবং তার জন্য সবার আগে প্রয়োজন হল সঠিক ওজন। আজকাল আমাদের দৈনন্দিন জীবনের ধরুন পাল্টে যাচ্ছে সেটার জন্য সবথেকে যেটা লক্ষ্য নিয়ে বিষয় সেটা হলো ওজন বেড়ে যাওয়া।

ওজন কমানো একটি প্রক্রিয়া, যা ধৈর্য এবং সময়ের প্রয়োজন। সঠিক খাদ্যাভ্যাস নিয়মিত ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্যকর জীবনধারা মেনে চললে আপনি নিশ্চয়ই ওজন কমাতে সফল হবেন। নিজেকে পর্যাপ্ত সময় দিন এবং লক্ষ লক্ষ ধীরে ধীরে পরিবর্তন আনুন এবং নিজের প্রতি সদয় হবেন দেখবেন আপনার ওজন অতি তাড়াতাড়ি কমে যাবে। এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনাদের যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url