মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার নিয়ম

মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার নিয়ম এবং মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে যদি জানতে চান তাহলে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। আমি এই পোস্টে আপনাকে জানাবো মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার সঠিক নিয়ম এবং এর উপকারিতা ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া।




আজকে আমরা এই আর্টিকেলে মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার নিয়ম , মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা , মরিঙ্গা পাউডারে কি কি রাসায়নিক উপাদান থাকে এবং মরিঙ্গা পাউডারের দাম কত ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব। তাহলে চলুন বেশি দেরি না করে আজকের আলোচনা শুরু করা যাক।

পোস্ট সূচিপত্রঃ মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার নিয়ম

মরিঙ্গা পাউডার কি

প্রাকৃতিক পুষ্টিগুণে ভরপুর সজনে সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই ধারণা নেই। মরিঙ্গা ওলেইfফে হল সজনের বৈজ্ঞানিক নাম। সজনী আমাদের দেশের গ্রাম অঞ্চলের সাধারণ একটি ভেষজ উদ্ভিদ। আবার সজনে ডাটা আমাদের দেশে সবজি হিসেবে সবাই খেয়ে থাকে।

মরিঙ্গা বা সজনিকে বলা হয় মাল্টিভিটামিন সুপার ফুড এবং এর গাছ মিরাক্কেল ট্রি নামে সবার কাছে সুপরিচিত। এছাড়াও সজনে পাতার গুড়ায় রয়েছে অনেক পুষ্টি উপাদান যা আমাদের গতানুগতিক খাদ্য থেকে অনেক বেশি পরিমাণে হয়ে থাকে।

সর্বোপরি এই খাবার মানবদেহের জন্য অনেক বেশি পুষ্টি সরবরাহ করে যা অনেকগুলো খাবার একসাথে খেলেও এই পুষ্টি উপাদান গুলো পাওয়া যায় না। সুতরাং মরিঙ্গা পাউডার দেহের জন্য উপকারী পুষ্টি উপাদানে ভরপুর এই কারণে একে সুপারফুটিং হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এই পোস্টে মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার নিয়ম ও এর উপকারিতা এবং অপকারিতা বিস্তারিত আলোচনা করা হলো

মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার সঠিক নিয়ম

মরিঙ্গা পাউডার বা সজনে পাতার গুঁড়া একটি অন্যতম সুপার ফুড। মানব শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় সকল ভিটামিন ও মিনারেল উপাদান এই পাউডারে পাওয়া যায়। মরিঙ্গা পাউডারের পুষ্টিগুণের উপর ভিত্তি করে পুষ্টি বিশেষজ্ঞগন প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় মরিঙ্গা পাউডার রাখার পরামর্শ দেন।

তবে আপনি চাইলে সকালে দুপুরেও রাতে যে কোন সময় এই সুপার ফুড টি খেতে পারেন। তবে অবশ্যই আপনাকে মনে রাখতে হবে খালি পেটে ও ভরা পেটে এই পাউডার খাওয়া যায়। নিচে মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার নিয়ম আলোচনা করা হলোঃ

সকালে মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার নিয়মঃ আমরা সকলেই জানি যে খাবার থেকে পুষ্টি উপাদান রক্তের মাধ্যমে দেহের বিভিন্ন অংশে পৌঁছায়। সুতরাং সকালে খালি পেটে কোন খাবার খাওয়া হলে তা থেকে পুষ্টিগুণ অতি তাড়াতাড়ি শরীরের বিভিন্ন অংশের ছড়িয়ে পড়ে। অন্য খাবারের সাথে খেলে সেই পুষ্টিগুণ শরীরের বিভিন্ন অংশে পৌঁছাতে অনেক সময় লাগে। এজন্য বিশেষজ্ঞরা সকালে খালি পেটে মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

রাতে মরিঙ্গা পাউডার খাওয়াঃ একটি গবেষণায় দেখা গেছে রাতের বেলা মরিঙ্গা পাউডার খাওয়া মানবদেহের জন্য অনেক উপকারী। বিশেষ করে রাতে আমাদের শরীরে নানা ধরনের কর্ম যোগ্যতার কাজ হয়। এবং এ সময় শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ এন্টিঅক্সিডেন্ট ও পুষ্টি উপাদানের প্রয়োজন হয়। এছাড়াও মরিঙ্গা পাউডার রাতের বেলা দ্রুত হজম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং রাতে ফ্রেশ ঘুম হয়।

মরিঙ্গা পাউডার সরাসরি খাওয়াঃ কোন খাবারের সঙ্গে মরিঙ্গা পাউডার না মিশিয়ে আপনি সরাসরি খেতে পারেন। এতে করে মানবদেহে মরিঙ্গা পাউডার অতি দ্রুত হজম করতে সাহায্য করে। তবে মরিঙ্গ পাউডার এভাবে খাওয়া অনেকের কাছে অসুবিধা মনে হতে পারে। কারণ সচারচর শুকনো পাউডার কোন মানুষ সরাসরি খেতে পারেন না। তাই আপনি চাইলে দুধের সঙ্গে অথবা পানির সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন।

মরিঙ্গা পাউডার চায়ের সাথে খাওয়াঃ প্রতিটি মানুষের দৈনন্দিন জীবনে চা একটি গুরুত্বপূর্ণ পানীয়। আমরা যে কোন আড্ডায় বা অবসর সময় পেলে চা খেয়ে থাকি। তাই মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার জন্য চা হতে পারে একটি উত্তম মাধ্যম। এছাড়াও চায়ের সাথে মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার জন্য আপনাদের কোন ঝামেলা পোহাতে হবে না। আপনি যদি চায়ের সাথে মরিঙ্গা পাউডার মিশিয়ে চা খান তাহলে চায়ের পুষ্টিগুণ আরো বাড়িয়ে তোলে এই পাউডার। বিশেষ করে গ্রিন টি হিসেবে মরিঙ্গা পাউডার খাওয়া আপনার শরীরের জন্য অনেক উপকারী হবে।

মরিঙ্গা পাউডার সালাদের সাথে খাওয়াঃ সালাদ হতে পারে আপনার জন্য একটি পুষ্টিকর ডায়েট প্ল্যান। আপনার অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস থেকে নিজেকে দূরে রাখতে সালাদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আপনার ওজন কমাতেও সালাদ অনেক ভালো কাজ করে। আপনি চাইলে মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার জন্য সালাত ব্যবহার করতে পারেন। কারণ এই পাউডার সালাদের সাথে বাড়তি পুষ্টি উপাদান যোগ করে যা আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

জুসের সাথে মরিঙ্গা পাউডার খাওয়াঃ আপনি সকালবেলা জুসের সাথে মরিঙ্গা পাউডার খেতে পারেন কারণ এটি একটি উত্তম সময়। এটি আমাদের শরীর ঠাণ্ডা ও সুস্থ রাখতে যেমন সাহায্য করে তেমনি শরীরের টক্সিক উপাদান বাড়িয়ে দেওয়ার কাজ করে। আপনি চাইলে লেবুর শরবতের সাথে মরিঙ্গা পাউডার খেতে পারেন এছাড়াও ফলের রসের সাথে মিশেও মরিঙ্গা পাউডার খাওয়া যায়।

মরিঙ্গা পাউডার দিয়ে কেক তৈরি করে খাওয়াঃ আমরা তো সচারাতর বিভিন্ন ধরনের কেক খেয়ে থাকি। বিভিন্ন সম্পূরক উপাদান অথবা বিভিন্ন ফ্লেভার যোগ করে কেক তৈরি করে কেকের স্বাদ বৃদ্ধি করা হয়। আপনারা চাইলে মরিঙ্গা পাউডার দিয়ে কেক তৈরি করতে পারেন এতে করে কেক যেমন সুস্বাদু হবে তেমনি তা পুষ্টি গুনে ভরপুর হিসেবে বিবেচিত হবে।

ওটমিল বা সিরিয়ালের সাথে মরিঙ্গা পাউডার খাওয়াঃ ওটমিলের সাথে মরিঙ্গা পাউডার মিশিয়ে খেতে পারেন এতে আপনার শরীরের অনেক উপকার হবে। কারণ আপনি যখন ওটমিলের সাথে মরিঙ্গা পাউডার মেশাবেন তখন এর পুষ্টিগুণ অনেক বৃদ্ধি পাবে।

মসলা হিসাবে মরিঙ্গা পাউডারঃ আপনি চাইলে মসলা হিসেবেও মরিঙ্গা পাউডার ব্যবহার করতে পারেন। বিশেষ করে পপকন বা কোন ভাজি তৈরি করতে মসলা হিসেবে মরিঙ্গা পাউডার আপনি খেতে পারবেন।

মরিঙ্গা পাউডার ভাতের সাথে খাওয়াঃ আমরা বাঙালিরা ভাতের সাথে ঝোল খেতে পছন্দ করি না। তাই সজনে পাতার গুড়া দিয়ে তৈরি বিভিন্ন খাবার ভাতের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া আমাদের কাছে একটি সাধারণ ব্যাপার। বিশেষ করে গরম ভাতের সাথে সজনে পাতার গুড়া মেশানো তরকারি যেমন পুষ্টিকর তেমনি সুস্বাদু।

মরিঙ্গা পাউডার বডি বানিয়ে খাওয়াঃ উপরোক্ত পদ্ধতি গুলো আপনার কাছে ঝামেলা মনে হলে আপনি অতি সহজে বড়ি বানিয়ে মরিঙ্গা পাউডার খেতে পারেন। আমাদের দেশে অনেক মানুষ আছে যারা নিমের পাতাও বড়ি বানিয়ে খেতে পারে। তাই আপনিও মরে যাওয়া পাউডার বড়ি বানিয়ে সকাল ও রাতে ওষুধের মত করে খেতে পারেন।

মরিঙ্গা পাউডার মিক্সড ফুডের সাথে খাওয়াঃ আপনি হানি নাট , ড্রাই ফুড অথবা মিক্সড ফুড যাই বলা হোক না কেন এই সবগুলোই আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। তাই আপনি চাইলে মরিঙ্গা পাউডার এগুলোর সঙ্গে যোগ করে খেতে পারেন এতে করে এর গুনাগুন অনেক বৃদ্ধি পাবে। এ কারণে অনেকেই হানি নাটের সঙ্গে মরিন্দা পাউডার মিশিয়ে খেয়ে থাকেন।

মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার উপকারিতা গুলো জেনে নেওয়া যাক



আমরা অনেক আগে থেকে জানি যে সজনে পাতার গুঁড়া একটি সুপার ফুড যাতে রয়েছে সকল ধরনের উপকারী পুষ্টিগুণ। তাই আপনি নিয়মিত সজনে পাতা বা মরিঙ্গা পাউডার খেলে যে উপকার গুলো পাবেন সে সম্পর্কে নিজে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলোঃ

মরিঙ্গা পাউডার রূপ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ পাউডার অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এবং মরিঙ্গা পাউডার এ থাকা অ্যামাইনো এসিড মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সকল ধরনের শারীরিক দুর্বলতা দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও এই গুঁড়ায় থাকা ভিটামিন এবং ফোনের উপাদান শরীরের অনুপস্থিত পুষ্টি চাহিদা অনেক গুণ বৃদ্ধি করে।

মরিঙ্গা পাউডার হজম বৃদ্ধি করেঃ মরিঙ্গা পাউডার বা সজনে পাতার গুঁড়ায় দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয়   খাদ্য আঁশ থাকে। এই খাদ্য আস আপনার হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তাকারী এনজাইমগুলোকে সচল করে রাখে। এতে করে আপনার লিভারের স্বাস্থ্য যেমন ঠিক থাকে তেমনি আপনার হজম প্রক্রিয়া সুস্থভাবে সম্পন্ন হয়।

মরিঙ্গা পাউডার পেটের গ্যাস দূর করেঃ আপনি যদি বেশি তেল জাতীয় খাবার খান তাহলে আপনার পেটে এসিডিটি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পেটের গ্যাস দূর করার জন্য প্রাকৃতিক উপায় অবলম্বন করা সব থেকে বেশি নিরাপদ হবে আপনার জন্য। তাই আপনি চাইলে প্রাকৃতিক উপায় হিসেবে মরিঙ্গা পাউডার ব্যবহার করতে পারেন কারণ মরিঙ্গা পাউডার পেটের এসিডিটি , প্রদাহ , গ্যাস ইত্যাদি সমস্যা দূর করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

মরিঙ্গা পাউডার রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ করেঃ আপনার রক্তে শর্করার পরিমাণ বেশি থাকলে তা ডায়াবেটিস উচ্চ রক্তচাপ এবং হার্টের সমস্যার সৃষ্টি করে থাকে। মরিঙ্গা পাউডার প্রাকৃতিক উপায়ে আপনার রক্ত থাকা শর্করা নিয়ন্ত্রণ করবে। এতে আপনার শরীরে ডাইবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা একেবারে কমে যাবে। অন্যদিকে শর্করার মাধ্যমে আপনার শরীরে যে রোগগুলো বাসা বাঁধে সে রোগ থেকে আপনি মুক্তি পাবেন।

মরিঙ্গা পাউডার হাড় মজবুত করতে সাহায্য করেঃ মরিঙ্গা পাউডার বা সজনে পাতার গুঁড়ায় প্রচুর পরিমাণে খনিজ উপাদান রয়েছে। এগুলো আমাদের দেহের কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। বিশেষ করে ক্যালসিয়াম দেহের হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে। এছাড়াও মরিঙ্গা পাউডারে পাওয়া ক্যালসিয়াম বাত ব্যথা, হাড়ের ব্যথা সকল ধরনের হাড়ের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

মরিঙ্গা পাউডার ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করেঃ মরিঙ্গা পাউডারের থাকে পটাশিয়াম লবন যা মানব দেহের জন্য অনেক উপকার। অন্যদিকে মরিঙ্গা পাউডার শরীরের রক্ত সঞ্চালন ধারা অব্যাহত রাখতে সাহায্য করে। আপনার শরীরে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ হওয়ার পাশাপাশি রক্তের পরিমাণ অনেক বৃদ্ধি পায়। তাই রক্ত বৃদ্ধি করতে এবং ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করতে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় সজনে পাতার গুঁড়া রাখা উচিত।

সজনে পাতার গুঁড়া কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করেঃ আমরা অনেকেই জানিনা যে এলডিএল কোলেস্টেরল হার্টের অনেক ক্ষতি করে থাকে। তাই যত কম এই কলেস্টেরল গ্রহণ করা যায় শরীরের জন্য তত উপকার। তাই নিয়মিত সজনে পাতার গুঁড়া খেলে রক্তে থাকা ক্ষতিকর কোলেস্টেরল দূর করে উপকারী কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। এতে করে রক্তের মধ্যে থাকা উপাদান গুলো সঠিকভাবে বন্টন হয় অন্যদিকে হার্টের সমস্যা ও দূর হয়।

সজনে পাতার গুড়া অ্যাজমা নিরাময় করেঃ অ্যাজমা থেকে শুরু করে সর্দি-কাশির মতো জটিল সমস্যা ও সমাধান করে থাকে মরিঙ্গা পাউডার বা সজনে পাতার গুড়া। তাই প্রাচীনকাল থেকেই সর্দি কাশি নিরাময়ের জন্য সজনে পাতার গুড়া ব্যবহার করা হয়।

সজনে পাতার গুড়া দৃষ্টিশক্তির বৃদ্ধি করেঃ সজনে পাতার গুঁড়ায় প্রচুর পরিমাণ বিটা ক্যারোটিন যা চোখের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। এতে করে আপনার দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পায় এবং আপনার চোখের স্বাস্থ্য উন্নত হয়। 

মরিঙ্গা পাউডার শরীর থেকে বিষাক্ত আর্সেনিক দূর করেঃ আর্সেনিক আমাদের শরীরের হার্ট ও ত্বকে অনেক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে দীর্ঘ সময় আর্সেনিকের সংস্পর্শে থাকলে তা হার্টের বিভিন্ন সমস্যা তৈরি করতে সাহায্য করে। তবে মরিঙ্গা পাউডারের থাকা পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীর থেকে বিষাক্ত আর্সেনিক দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া গুলো জানুন

মরিঙ্গা পাউডার একটি প্রাকৃতিক খাবার সাধারণত প্রাকৃতিক খাবারের তেমন কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকে না তবে আপনি অতিরিক্ত মাত্রায় মরিঙ্গা পাউডার খেলে আপনার কিছু কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। নিচে দীর্ঘদিন যাবত মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলো বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হলোঃ

আপনি যদি একজন ব্লাড প্রেসারে রোগী হন এবং নিয়মিত ব্লাড প্রেসার এর ওষুধ খান তাহলে মরিঙ্গ পাউডার খাওয়া উচিত নয় কারণ মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার পর প্রেসার এমনিতেই কম থাকে এরপরেও আপনি যদি নিয়মিত ওষুধ খান তাহলে আপনার পেশা একেবারে কমে যেতে পারে এতে করে আপনার শরীরের অনেক ক্ষতি হতে পারে।

মরিঙ্গা পাউডার খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকার কিন্তু আপনি যদি অতিরিক্ত মাত্রায় মরিঙ্গা পাউডার খান তাহলে আপনার হজম প্রক্রিয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারেন অর্থাৎ মরিঙ্গা পাউডার বেশি পরিমাণে খেলে আপনার বমি বমি ভাব , পেট ব্যথা এবং পেটে নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হবে।

আপনার যদি কিডনির কোন সমস্যা থেকে থাকে তাহলে মরিঙ্গা পাউডার খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে। তবে আপনি চাইলে শরীরের সুস্থতার জন্য অল্প পরিমাণে সজনে পাতা খেতে পারেন। তবে আপনি যদি সজনে পাতা বেশি পরিমাণে খান তাহলে কিডনি সমস্যা আরো বৃদ্ধি হতে পারে।

মরিঙ্গা পাউডার স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে গর্ভকালীন সময়ে সজনে পাতা বা মরিঙ্গা পাউডার খাওয়া উচিত নয়। কারণ সজনে পাতার সাথে যে ডালগুলো থাকে তার শরীরের জন্য অনেক ক্ষতিকর। এগুলো শরীরের প্রবেশ করলে শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেমের অনেক ক্ষতি করে।

মরিচা পাউডার রক্তের শর্করা কমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। কিন্তু তাই বলে আপনারা শুধু মরিন্দা পাউডার খেলেই ফল পাবেন না কারণ এটি সাহায্যকারী হিসেবে কাজ করে প্রতিসেদ্ধ হিসেবে নয়।

বিশেষজ্ঞদের মধ্যে কোন মানুষ যদি দিনে 70 গ্রামের বেশি মরিঙ্গা পাউডার খেয়ে থাকে তাহলে তার দেহে থাকা ভিটামিন ও মিনারেল উপাদানের সাথে মরিঙ্গা পাউডার বিক্রিয়া করে বিষাক্ত করে ফেলতে পারে।

যাদের রক্তক্ষরণ ব্যাধি রয়েছে তাদের মরিঙ্গা পাউডার খাওয়া উচিত নয়। এছাড়া মাসিকের সময় মরিঙ্গা পাউডার খেলে পিত্তকে বাড়িয়ে তুলে এ সময় মরিঙ্গা পাউডার খাওয়া। এড়িয়ে চলতে হবে।

মরিঙ্গা পাউডারের সঠিক দাম জানুন

মরিঙ্গ পাউডার বা সজনে পাতার গুঁড়া একটি সুপার ফুড। সাধারণত এর দাম নির্ধারণ করা হয় এর পুষ্টিগণের উপর ভিত্তি করে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক মরিঙ্গা পাউডারের দাম কত।আপনি যদি ৫০০ গ্রাম মরিঙ্গা পাউডার কিনতে চান তাহলে আপনাদের খরচ হবে ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত। আর আপনি যদি এক কেজি মরিঙ্গা পাউডার কিনতে চান তাহলে সর্বনিম্ন ১৬০০ এবং সর্বোচ্চ ২৪০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হবে।

এছাড়াও আপনি চাইলে ১০০ থেকে মরিঙ্গা পাউডার থেকে কেনা শুরু করতে পারেন। তবে মরিঙ্গা পাউডার কেনার সময় অবশ্যই আপনাকে খেয়াল করতে হবে এটা শুধু পাতা দিয়ে তৈরি নাকি এর সাথে ডালপালাও ব্যবহার করা হয়েছে। যদি এ বিষয়ে আপনার নিশ্চিত হতে সমস্যা হয় তাহলে বিশ্বস্ত দোকানদারের কাছ থেকে কিনতে পারেন তাহলে ঠকার সম্ভাবনা কম থাকে।

মরিঙ্গা পাউডারে কি কি রাসায়নিক উপাদান থাকে তা জানুন

আপনি কি মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার নিয়ম জানেন। অনেকে আছেন যারা মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার নিয়ম মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে জানেন না এবং অনেকেই আছেন মরিঙ্গা পাউডারে কি কি রাসায়নিক উপাদান থাকে সেটিও জানেনা। তাহলে চলুন আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে জেনে নেওয়া যাক মরিঙ্গা পাউডারের কি কি রাসায়নিক উপাদান পাওয়া যায়।

মরিঙ্গা পাউডার বা সজনে পাতার গুড়া অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যসম্মত একটি খাবার। পুষ্টি উপাদানের ভরপুর থাকায় সজিনা গাছকে মিরাক্কেল ট্রি এবং এর পাতাকে সুপার ফুড বলা হয়ে থাকে। সজিনা পাতায় আছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, জিংক , আয়োডিন, ভিটামিন বি ৯ ভিটামিন এ সহ দেহের জন্য উপকারী সকল প্রকার ভিটামিন ও খনিজ উপাদান।

 মরিঙ্গা পাউডার তৈরির ঘরোয়া উপায়



মরিঙ্গা পাউডার বা সজনে পাতার গুড়া তৈরি করা অনেক সহজ আপনি চাইলে খুব সহজে ঘরে বসেই সজনে পাতার গুড়া তৈরি করতে পারবেন। সজনে পাতার গুড়া তৈরি করতে চাইলে আপনাকে কয়েকটি ধাপ অতিক্রম করতে হবে তাহলে আপনি খুব সহজেই এটি তৈরি করতে পারবেন।

প্রথমে আপনাকে গাছ থেকে কিছু কচি সজনে পাতা উঠিয়ে নিয়ে আসতে হবে এরপর পরিষ্কার পানিতে খুব ভালো করে পাতাগুলো ধুয়ে নিতে হবে। এরপর পাতাগুলো রোদে শুকোতে দিতে হবে ভালোভাবে শুকানো হয়ে গেলে আপনি সেটা ঘরোয়া উপায়ে হামান দিস্তায় বা শিল-পাটাই গুড়ো করে নিতে পারবেন। গুঁড়ো করা হয়ে গেলে সেটা একটি শুকনো কৌটায় ভালো করে সংরক্ষণ করতে হবে। এবার তাহলে আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন কিভাবে ঘরোয়া উপায় মরিঙ্গা পাউডার তৈরি করা যায়।

মরিঙ্গা বা সজনে পাতার গাছ চেনার উপায়

মরিঙ্গা বা সজনে পাতার গাছ বাংলাদেশের অনেক জায়গায় চাষ হতে দেখা যাচ্ছে বিশেষ করে মেহেরপুর জয়পুরহাট এবং নাটোরে প্রচুর পরিমাণ সজনে গাছ চাষ হচ্ছে। আমরা যারা গ্রামে থাকি তারা সজনে পাতার গাছ সহজেই চিনতে পারি কিন্তু যারা শহরে থাকে তারা সজনে পাতার গাছ খুব সহজে চিনতে পারেনা।

সজনে গাছের পাতাগুলো অনেক ছোট ছোট এবং পাতাগুলো সবুজ বর্ণের হয়। সজনে গাছে সজিনা নামে একটি ফল হয় যাকে সাধারণত গ্রাম বাংলায় ডাঁটি বা সজনে বলা হয় সেটা তরকারিতে সবজি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। সজিনা গাছে সাদা রং এর ফুল ফোটে।

মরিঙ্গা বা সজনে গাছের কোন কোন অংশ ব্যবহার করা যায়

সজিনা গাছের ফুল ফল এবং পাতা সবকিছুই ব্যবহার করা হয়। সজিনা একটি অতি পরিচিত এবং খুবই সুস্বাদু সবজি। বারোমাসি সজিনা গাছ  প্রায় সারা বছরই ফলন দিয়ে থাকে। বারোমাসি সজিনা গাছে সব সময় ফুল ফুটতে দেখা যায়। আমাদের দেশে দুই থেকে তিন প্রকারের সজিনা পাওয়া যায়। আপনার বসতবাড়ির আশেপাশে সজিনা একটি আদর্শ সবজি গাছ হতে পারে।

সজিনা গাছের ফুল ফল এবং পাতা সবকিছুই আপনার ব্যবহার উপযোগী। তাই সজিনা গাছকে মিরাক্কেল ট্রি বলা হয়। সজিনা পাতা আপনি গুড়া করে খেতে পারেন এছাড়াও সজিনা আপনি সবজি হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন। সজিনা ফুল আপনি চাইলে দুধের সাথে রান্না করে খেতে পারেন।

মরিঙ্গা পাউডারের স্বাদ কেমন 

মরিঙ্গা পাউডার সাধারণত তেতো স্বাদ এর হয়ে থাকে। আমরা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে মরিঙ্গা পাউডার খেয়ে থাকি। কিন্তু মরিঙ্গা পাউডার অনেক তেতো হওয়ায় এটা খুব সহজে অনেকে খেতে পারে না তাই মরিঙ্গা পাউডার বিভিন্ন উপায়ে আপনি খেতে পারবেন।

আপনি যদি মরিঙ্গা পাউডার এর সাথে লেবুর মিক্স করে খান তাহলে তেতো ভাব কমে যাবে এবং আপনি খুব সহজেই মরিঙ্গা পাউডার খেতে পারবেন। এছাড়াও আপনি চাইলে টক দই এর সাথে ঘোল বানিয়ে মরিঙ্গা পাউডার খেতে পারেন তাহলে আপনি তেতো ভাব অনুভব করবেন না।

লেখক এর শেষ মন্তব্য

প্রাণপ্রিয় পাঠক ভাই ও বোনেরা আমি আশা করি আপনারা যে বিষয় সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন তা নিশ্চয়ই জানতে পেরেছেন। আর এই পুরো আর্টিকেলে মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার নিয়ম, মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার উপকারিতা এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া , মরিঙ্গা পাউডার এর দাম , মরিঙ্গা পাউডার তৈরির ঘরোয়া উপায় ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি।

এই আর্টিকেলটি পড়ার পর আপনার যদি কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আমার আর্টিকেলে সঠিক তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি কোন ভুল ত্রুটি হলে মাফ করবেন। এবং কমেন্ট করে আমাকে ভুলগুলো জানাবেন। আমি তা অবশ্যই সংশোধন করার চেষ্টা করব। আর আমার এই আর্টিকেল পড়ে যদি আপনি উপকৃত হন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু বান্ধবের নিকট শেয়ার করবেন যাতে তারাও আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হতে পারে ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url